বাংলাদেশ রেলওয়েঃ ট্রেনের কোন সিট গুলো জানালার কাছে
সোমবার, ২২ জুলাই, ২০১৯
3 Comments
আসনের ধরণ
রেলের আসন আছে কয়েক প্রকারের। সাধারণত তিন প্রকার:
(১) তৃতীয় শ্রেণী বা শোভন, যেখানে লম্বা লম্বা আসন থাকবে, গদি এবং চামড়ায় মোড়া;
২) দ্বিতীয় শ্রেণী বা শোভন চেয়ার (বা চেয়ার কোচ), যেখানে পাশাপাশি দুটো (বা তিনটে) করে গদিমোড়ো চেয়ার থাকবে;
(৩) প্রথম শ্রেণী (বা ফার্স্ট ক্লাস), যা তাপানুকুল (বা শীতাতপ-নিয়ন্ত্রীত) এবং চেয়ার কোচ;
(৪) কেবিন (প্রথম শ্রেণী), বগিতে আলাদা আলাদা ছোট ছোট কক্ষ থাকবে, যাতে লম্বা আসন থাকবে এবং মাথার উপরে আরেকখানা আসন থাকবে, দুটোতেই বিছানা পেতে ঘুমানো যাবে, অনেকে একে স্থানীয় ভাষায় কিংবা ব্রিটিশ আমলের ভাষায় ‘কূপ’ও বলে থাকেন।
(৫) ভিআইপি বগি, এজাতীয় বগির আলাদা নাম আছে, আমার সেটা মনে নেই, এজাতীয় বগি সাধারণত ভিআইপিদের বহনের জন্য সংযোজিত হয়, পুরো একটা বগিই বিশেষ সুবিধা সংবলিত হয়ে থাকে, বিছানা পাতা থাকে, বেসিন থাকে, কমোড থাকে, সোফা থাকে, জানালায় পর্দা থাকে, রান্না করার সরঞ্জামাদি থাকে –বিস্তর সুবিধা সংবলিত একটা আলাদা বগি বলা যায়।
(৬) নেই আসন, এটাও একপ্রকার আসন, কেননা টিকেটের গায়ে আসনের ধরণ অংশে লেখা থাকে “নেই”, এর মানে হলো নির্দিষ্ট কোনো আসন আপনাকে দেয়া হয়নি, যদিও আপনি ভাড়া ঠিকই দিয়েছেন, আপনাকে সারা পথ দাঁড়িয়ে যেতে হবে অর্থাৎ স্ট্যান্ডিং বা দণ্ডায়মান টিকেট দেয়া হলো, সুযোগ পেলেই এখানে-ওখানে খালি আসনে বসে বসে পা-কে আরাম দিয়ে যাবার অনুমতিপ্রাপ্ত।
…আরোও এক শ্রেণীর আসন আছে, নাম সুলভ শ্রেণী, ওটা সাধারণত মেইল ট্রেনের বগিতে লেখা থাকে। বোঝাই যাচ্ছে, তৃতীয় শ্রেণীরও নিচে যদি কিছু থাকে, তবে সেসব সুবিধা সেখানে থাকে। তবে মাঝে মাঝে নতুন বগি হলে সুবিধাগুলো বেশি থাকে।
একটা পূর্ণাঙ্গ ট্রেনে কয়েক ধরণের বগি থাকে:
(১) বাহন বগি, সাধারণত যাত্রীরা যেগুলোতে চলাচল করেন; এগুলোতে দুপাশে অথবা একপাশে পায়খানা বা টয়লেট থাকে।
(২) খাবার গাড়ি বা ফুড কার, এই বগিতে দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে থাকে মানুষ বহনের জন্য শোভন আসন, আর বাকি অংশে থাকে ডাইনিং টেবিল ও রান্নাঘর। এখান থেকে খাবার প্রস্তুত করে রেলওয়ের সাদা পোষাক পরে লোকজন খাবার পরিবেশন করেন বগিতে বগিতে এবং খাবার ঘরের ডাইনিং-এ।
(৩) জেনারেটর রুম বা পাওয়ার কার, অনেকে একে বলেন ইঞ্জিন রুম, আসলে এখানে ট্রেনের ইঞ্জিন থাকে না। এখানে একটা বিশাল জেনারেটর পুরো ট্রেনের বিদ্যুত সরবরাহ করে।
(৪) নামাজ ঘর, এই বগির দুই-তৃতীয়াংশ জুড়ে থাকে শোভন আসন, বাকিটা জুড়ে থাকে একটা ছোট্ট কক্ষ, যাতে, ট্রেনের ধরণভেদে কখনও মেঝেতে কিছু বিছানো থাকে, কখনও কিছুই থাকে না। মজার বিষয় হলো অধিকাংশ সময়ই এই কক্ষটি স্ট্যান্ডিং টিকেটধারীদের বসে যাবার জন্য উত্তম স্থান বিবেচিত হয়।
(৫) গার্ড রুম, এই বগিতে এক পঞ্চমাংশ জুড়ে থাকে যাত্রীদের আসন, আর বাকিটা জুড়ে থাকে ছোট একটা কক্ষ, যেখানে ট্রেনের গার্ডরা অবস্থান করেন, সেখানে আরো যিনি অবস্থান করেন, তিনি হলেন ট্রেনের পরিচালক।
টিকিটের ধরণ
টিকিট কেটে নিলে স্টেশন থেকে নির্দিষ্ট বগির একটি বা একাধিক সিট নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া যায়। স্থান ও ধরণভেদে টিকিটের মূল্য আলাদা। টিকিট হয় তিন রকম: স্ট্যান্ডিং টিকেট (বা দণ্ডায়মান পাস), সাধারণ টিকেট (বা আসন পাস), মাসিক টিকেট (বা একমাসের পাস)। টিকিট সংগ্রহ করতে হয় যেকোনো স্টেশন থেকে, এবং সেই টিকিট সাধারণত কম্পিউটার কম্পোজ হয়ে নির্দিষ্ট ফোর্মেটে বেরিয়ে আসে। ছাপানো টিকিটের পিছন দিকে থাকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা।
আরো এক ধরণের টিকিট আছে রেলের সাথে যুক্ত, যা হলো প্লাটফর্ম টিকেট। এই টিকেট দিয়ে রেলে ভ্রমণ করা যায় না, শুধু স্টেশনের প্লাটফর্মে ঢুকে আবার বেরিয়ে আসতে এই টিকেট ব্যবহৃত হয়। এই টিকেটের দাম মাত্র ২ টাকা (আগস্ট ২০১৭: ৳১২)। টিকেটটি ছোট্ট এক টুকরো শক্ত কাগজ, হলুদ রঙের, তার গায়ে কালো কালিতে ছাপার হরফে লেখা।
আসুন আর আমরা কথা না বাড়িয়ে মূল কাজে ফিরে আসি।
আপনারা হয়তো ঢাকা অথবা যে কোন স্থানে যাওয়ার জন্য, ট্রেনের টিকিট ক্রয় করেন। কিন্তু অনেকে ট্রেনের টিকিট ক্রয় করার সময় সবাই খোঁজা খুঁজি করে যে একটু জানালার পাশে বসে গন্তব্যস্থলে যাবো। তাদের জন্য আমাদের এই পোস্ট। আপনারা বুঝবেন কিভাবে যে এই সেটগুলো জানালার কাছে। নিচে যেগুলো সিট জানালার কাছে হয়ে থাকে,তার নাম্বার গুলো দেওয়া হলো।
৩ সিটের জানালার কাছে।
2-7-12-17-22-27-32-37-42-47-52-57-62-67-72-77-82-87।
২ সিটের জানালার কাছে।
1-6-11-16-21-26-31-36-41-46-51-56-61-66-71-76-81-86-91-92।
অনলাইন টিকেট গুলোর বগির ইংরেজি নামের পাশে ( )বাংলা হরফ লিখা থাকলে যাত্রীদের ভোগান্তি হয় না।
উত্তরমুছুনঅনলাইনে টিকিট ক্রয়ের সময় বুঝবো কিভাবে আমার সিট উল্টো দিকে না কি
উত্তরমুছুনআমিও জানতে চাই
মুছুন