আজকে প্রকাশিত চাকরির পরীক্ষার নোটিশ গুলো পাবেন

থাই সরপুঁটি মাছের চাষ

থাই সরপুঁটি মাছের চাষ



থাই সরপুঁটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের দ্রুত বর্ধনশীল এক বিশেষ প্রজাতির মাছ। এ মাছ ১৯৭৭ সালে থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে আমদানি করা হয়েছে। তাই আমাদের দেশে থাই সরপুঁটি নামেই বহুল পরিচিত। মাছটি দেখতে দেশীয় সরপুঁটির মতোই। তবে এর বর্ণ দেশীয় সরপুঁটির চেয়ে আরো উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়। এই মাছটিকে অনেকে রাজপুঁটি নামেও আখ্যায়িত করেন।



থাই সরপুঁটি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এটি বেশ শক্ত প্রকৃতির অধিক ফলনশীল মাছ। প্রতিকূল পরিবেশে কম অক্সিজেনযুক্ত বেশি তাপমাত্রার পানিতেও এ মাছ বেঁচে থাকতে পারে।



এ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে-ছিঁটিয়ে আছে অসংখ্য পুকুর-ডোবা-জলাশয়। বেশিরভাগ নিম্নবিত্ত চাষির বাড়ির আশপাশেই রয়েছে একটি বা দুটি মাঝারি আকারের পুকুর কিংবা ডোবা। এসব পুকুর-ডোবায় বছরের অধিকাংশ সময়ই পানি থাকে না। গ্রামাঞ্চলের পতিত এ পুকুর-ডোবাগুলো সামান্য সংস্কার করে অতি সহজেই চাষোপযোগী করা যায়।



এ দেশের গরিব প্রান্তিক চাষিরা স্বল্প সময়ে স্বল্প খরচে এ ধরনের জলাশয়ে থাই সরপুঁটি মাছের চাষ করে পরিবারের প্রয়োজনীয় মাছ তথা আমিষের চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি আয়ের একটি বির্ভযোগ্য উৎসের সন্ধান পেতে পারেন।



থাই সরপুঁটি চাষের কিছু সুবিধাজনক দিকও রয়েছে। রুই জাতীয় মাছের চেয়ে তুলনামূলক অনেক কম খরচে, কম সময়েও সহজতর ব্যবস্থাপনায় এ মাছ থেকে কাক্সিক্ষত মাত্রায় বেশি উৎপাদন পাওয়া সম্ভব। মিশ্র চাষ পদ্ধতি অর্থাৎ রুইসহ অন্যান্য উন্নত প্রজাতির মাছের সঙ্গেও অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে এ মাছ চাষ করা যায়। ছয় মাসে একটি থাই সরপুঁটির পোনা গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনে উন্নীত হয়ে থাকে। একই পুকুরে বছরে দুইবার এ মাছের চাষ করা যায়।



নিম্নে থাই সরপুঁটি মাছের চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোকপাত করা হলো

এ মাছ চাষের জন্য পুকুরের আয়তন ৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ হতে পারে। এর চেয়ে বেশি হলেও ক্ষতি নেই। তবে এক একরের ঊর্ধ্বে না হলেই ভালো। পুকুরের গভীরতা হবে ১.৫ মিটার থেকে ২ মিটার অর্থাৎ তিন থেকে চার হাত। পোনা ছাড়ার আগে পুকুর ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। শুকনো মৌসুমে পুকুরের সম্পূর্ণ পানি নিষ্কাশন করে তলার মাটি ১০/১৫ দিন ধরে রোদে শুকাতে হয়। অতঃপর লাঙল দিয়ে কর্ষণ করে নিতে হবে। পুকুর মুকানো সম্ভব না হলে রাক্ষুসে মাছ ও অন্যান্য ক্ষতিকর প্রাণী মেরেফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ পর্যায়ে পুকুর প্রস্তুতির জন্য প্রতি শতাংশে এক কেজি হারে পাথুরে চুন প্রয়োগ করা একান্তই অপরিহার্য।

চুন প্রয়োগের সাত দিন পর প্রতি শতাংশে ৪ কেজি গোবর, ১৫০ গ্রাম টিএসপি, ১০০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়।

সার পুকুরের তলার মাটির ওপর ছড়িয়ে দিয়ে কোদালের সাহায্যে ভালোভাবে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। সার প্রয়োগের পর যথাশিগগির পুকুর পানি দিয়ে ভরে দেয়া অতীব জরুরি।



প্রস্তুতকৃত পুকুরে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য প্লাঙ্কটনের পর্যাপ্ত মজুদ সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হয়ে প্রতি শতাংশে ১.৫ ইঞ্চি থেকে ২ ইঞ্চি সাইজের ৬০-৬৫টি থাই সরপুঁটির পোনা ছাড়া যেতে পারে। পুকুরে যে পরিমাণ মাছ আছে, সে মাছের মোট ওজনের শতকরা চার থেকে ছয় ভাগ হারে চালের কুড়া বা গমের ভুসি সম্পুরক খাদ্য হিসেবে প্রতিদিন সকাল ও বিকালে দুবার পুকুরের সর্বত্র ছিঁটিয়ে দিতে হবে। প্রতি মাসে একবার জাল টেনে মাছের গড় ওজন নির্ধারণ করে খাবার পরিমাণ ক্রমশ বাড়াতে হবে। পুকুরে মাছের খাদ্য ঘাটতি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতি শতাংশে ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া ও ওই পরিমাণ টিএসপি সার প্রয়োগ করা অত্যাবশ্যক। থাই সরপুঁটি সাধারণত নরম ঘাস পছন্দ করে। তাই এ মাছের জন্য ক্ষুদে পানা, টোপা পানা, নেপিয়ার ঘাস, কলাপাতা ইত্যাদি প্রতিদিন সামান্য পরিমাণে হলেও সরবরাহ করা গেলে আনুপাতিক উৎপাদনও সন্তোষজনকভাবে বৃদ্ধি পাবে।



ওই প্রক্রিয়ায় পাঁচ-ছয় মাস পালনের পর এক একটি মাছের ওজন দাঁড়াবে গড়ে ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম। এ সময় মাছ বাজারজাত করার পুরোপুরি উপযোগী হয় এবং সর্বনিম্নে ৮০ টাকা কেজি হিসাবে বিক্রি করা যায়। সুস্বাদু মাছ হিসেবে বাজারে এ মাছের চাহিদাও থাকে প্রচুর।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "থাই সরপুঁটি মাছের চাষ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel