আজকে প্রকাশিত চাকরির পরীক্ষার নোটিশ গুলো পাবেন

আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল

আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল


আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল

(৩ মার্চ ১৮৪৭ থেকে ২ আগস্ট ১৯২২।)


বাসস্থান- এডিনবরায়, জাতীয়তা-স্কট।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান- এডিনবরা স্কুল, লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ।

আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল প্রখ্যাত বিজ্ঞানী ও উদ্ভাবক। টেলিফোনের অন্যতম আবিষ্কারক হিসেবে তিনি সবচেয়ে পরিচিত। তাকে বোবাদের পিতা তথা দ্য ফাদার অফ দ্য ডিফ নামে ডাকা হতো। তার বাবা, দাদা এবং ভাই সবাই একক অভিনয় ও বক্তৃতার কাজে জড়িত ছিলেন এবং তার মা ও স্ত্রী উভয়েই ছিলেন বোবা। এ কারণেই বোবাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে তিনি অনেক গবেষণা করেছেন। টেলিফোন উদ্ভাবনের আগে থেকেই তিনি শ্রবণ ও কথন সংশ্লিষ্ট গবেষণা নিয়োজিত ছিলেন। ১৮৭৬ সালে তাকেই টেলিফোনের প্রথম মার্কিন পেটেন্টের সম্মানে ভূষিত করা হয়। পরবর্তী জীবনে বেল আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা করেন যার মধ্যে রয়েছে উড়ো নৌকা এবং বিমানচালনবিদ্যা। ১৮৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বেল। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন যে টেলিফোন, সেটিকেই তিনি এক উটকো ঝামেলা জ্ঞান করতেন। এজন্যেই নিজের গবেষণা ও অধ্যয়ন কক্ষে কোন টেলিফোন রাখতেন না। বেল মারা যাওয়ার পর আমেরিকার সকল টেলিফোনে এক মিনিটের জন্য অবিরাম রিং বাজানো হয়। মার্কিন প্রশাসনের ভাষ্য মতে যে মহান ব্যক্তি মানুষে-মানুষে যোগাযোগের এ পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন তাকে উপযুক্ত সম্মান দেখানোর জন্যই এমনটি করা হয়েছে।

আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ও প্রতিভার অধিকারী ছিলেন। আধুনিক বিজ্ঞানের একটি প্রধান আবিষ্কার হচ্ছে টেলিফোন। এই আবিষ্কার যোগাযোগ ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে। আর বিজ্ঞান জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল বিশ্বে প্রথম টেলিফোনের আবিষ্কারক।

আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল এডিনবরা স্কুলে লেখাপড়া করেন। পরে তিনি লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজে অধ্যায়ন করেন। এর পরে তাঁর পিতার সঙ্গে কানাডায় যান এবং সেখানে মুক ও বধিরদের বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার কাজ করেন। তিনি পি,এইচ,ডিগ্রী পান জার্মানীর উর্জবাগ থেকে।

একটি ঘটনা গ্রাহামবেলকে সজাগ করে তোলে। সেটি হচ্ছে ১৮৭৫ সালের দিকে গ্রাহামবেল টেলিগ্রাফে অনেকগুলো বার্তা পাঠানো নিয়ে গবেষণা করছিলেন। এই কাজ করার সাথে বিদ্যুতের সাহায্যে শব্দ পাঠানো নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। হঠাৎ তারের ভিতর দিয়ে এক সিপ্রংয়ের টংকার ধ্বনি তাকে বিশেষভাবে সচকিত করে তোলে। এই বিষয়ে তিনি বিস্তর গবেষণায় মেতে উঠেন। আর এই গবেষণার ফলে গ্রাহামবেলই প্রথম টেলিফোনীয় সঠিক নীতি ধরতে পেরেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, বায়ুর যেমন ঘনত্বের তারতম্য হয়, তেমনি শব্দ উৎপাদনে যদি বিদ্যুৎ প্রবাহের তীব্রতার তারতম্য ঘটাতে পারি তাহলে টেলিগ্রাফে বার্তা পাঠানোর বদলে শব্দধ্বনি পাঠাতে পারি। অনেক গবেষণা ও চেষ্টার ফলে তিনি একটা যন্ত্র তৈরি করেছিলেন, যা আজ টেলিফোন নামে খ্যাত।

টেলিফোন আবিষ্কারককে এই নিয়ে প্রচণ্ড বিতর্ক বাঁধে। গ্রাহামবেল ও তাঁর এক সহকর্মী ওয়াটসন দুইজনে মিলে একই আবিষ্কারের জন্য ব্যস্ত। গ্রাহামবেলের প্রথম টেলিফোন পেটেন্ট অনুমোদন হয় ১৮৭৬ সালের ৭ মার্চ। এর তিন দিন পর তিনি এবং ওয়াটসন বিভিন্ন রুম থেকে কথা শোনার চেষ্টা করছিলেন। গ্রাহামবেল তাঁর পেটেন্টে নতুন ধরনের ট্রান্সমিটার দিয়ে পরীক্ষা করলেন। রিসিভার লাগানো তারের এক প্রান্ত কানে লাগিয়ে ওয়াটসন ঘরে বসে কাজ করছিলেন। এমন সময় তিনি গ্রাহামবেলের কথা শুনতে পেলেন, ‘Mr.Watson, come here please. I want you. হঠাৎ-ই শুনতে পেলেন গ্রাহামবেলের কন্ঠস্বর| আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছুটে গেলেন গ্রাহামবেলের কাছে এবং তাঁকে জড়িয়ে ধরলেন। মজার কথা একদিন সম্রাট ডন পেদ্রা কানে রিসিভার লাগিয়ে বসে আছেন। ঠিক এই সময় অন্য প্রান্ত থেকে গ্রাহামবেল সেক্সপিয়রের হ্যামলেট থেকে দুটি বিখ্যাত লাইন টেলিফোনে আবৃত্তি করলেন-“To be or not be”… সম্রাট চেঁচিয়ে বললেন- My God! It speaks! তারপর এক প্রদর্শনীতে এই টেলিফোন দেখানো হল। এই টেলিফোন দেখার ও কথা বলার ভিড় উপচে পড়ল। জনসাধারণ বিস্ময়াভূত হয়ে পড়ল।

মূলত ‘Mr.Watson, come here please. I want you.’ এই কথার ধ্বনিতে আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগের সূত্রপাত করেন। এই আবিষ্কারের ফলে আজও সর্বত্র গ্রাহামবেল উপস্থিত আছেন। যোগাযোগের ক্ষেত্রে টেলিফোনের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপূর্র্ণ। টেলিফোন-এর আবিষ্কারককে এ নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়। শেষ পর্যন্ত মামলা চলতে থাকে। কিন্তু তারও ফয়সালা হয়ে যায়। অবশেষে গ্রাহামবেল টেলিফোন-এর আবিষ্কারক হিসেবে বিবেচিত হন।

তিনি এই আবিষ্কারের কারণে অনেক খ্যাতি পান। সেই সঙ্গে জীবনে পান অনেক সম্মান। তবুও এতে তাঁর আত্মতৃপ্তি বোধ খুবই সামান্য।

টেলিফোন আবিষ্কারের পরে গ্রাহামবেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে থাকেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি মোটেও সুখী ছিলেন না। নিঃসঙ্গতা তাঁকে কুড়ে কুড়ে খেত। এই বোধ থেকে জীবনে তিনি খুব কষ্ট পেতেন। শেষ পর্যন্ত নিজের আবিষ্কার-এর উপর রাগান্বিত হতেন। টেলিফোনটাকে তিনি ঘৃণা করতেন এবং বলতেন, ‘এই জানোয়ারটাকে আমি কখনও ব্যবহার করি না’। আর এই মানসিক যন্ত্রণার কারণে কখনো স্বস্থি পান নি তিনি।

১৮৮৮ সালে তিনি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির প্রতিষ্ঠা করেন। এই উদ্যোগ একটি সূদরপ্রসারী ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর ১৯৭৭ সালের ১৩ সেপেটম্বর দ্যা আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল ইনস্টিটিউট (যা বেল ইনস্টিটিউট নামে পরিচিত) প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে প্রচুর তথ্যের সমারোহ ঘটেছে। আজ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির প্রসারের ফলে এই ইনস্টিটিউট-এর তথ্য অনলাইনে ঘরে বসেই এক্সেস করা যাচ্ছে। এতে বেল ভার্চুয়াল লাইব্রেরি গড়ে ওঠেছে।

বিজ্ঞানীর জীবনে মজার ঘটনা

ঘটনাঃ ১

একদিন তিনি সহপাঠীদের সঙ্গে এক কারখানায় গিয়েছিলেন। সেখানে কিছু গমের দানা তাদের পরদিন ছাড়িয়ে আনতে হবে। বাড়িতে এসে তিনি নখ পরিষ্কার করার ব্রাশ দিয়ে খুব তাড়াতাড়ি খোসা ছাড়িয়ে নিলেন। পরদিন মালিককে এই কথা বললেন। মালিক এই নীতি অনুযায়ী মেশিন বসালেন।

ঘটনাঃ ২

গ্রাহামবেলের আরেকটি আবিষ্কার খুব ভালো কাজে আসল। মুক ও বধিরদের জন্য তিনি বিশেষ ধরনের যন্ত্র তৈরি করলেন। এই যন্ত্রটি একই কথা বার বার বলে যাবে। তিনি বধিরদের শিক্ষা দেবার জন্য একটা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন। আর বধিরদের শ্রবণ শক্তিদান নিয়ে গবেষণা করতে গিয়েই তিনি টেলিফোন আবিষ্কার করেন যা পরবর্তীতে যোগাযোগ ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়। এ সময় গ্রাহামবেল ম্যাবেল হাবার্ড নামে একটি বধির মেয়েকে জীবনসঙ্গিনী হিসেবে বেছে নেন। যা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে বিবেচিত।

ঘটনাঃ ৩
আপনি ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে বলেন "HELLO", কিন্তু জানেন কি এই "HELLO" টার প্রচলন, কিভাবে হয়েছিল ?
"HELLO" যে একটা মেয়ের নাম এটাও কি জানা আছে আপনার ?
কি অবাক হয়েছেন ?
ভাবছেন কে ওই মেয়েটা ?
মেয়েটা হচ্ছে মার্গারেট হ্যালো। আলেকজান্ডার গ্রাহাম বেল, টেলিফোনের আবিস্কারক এর গার্লফ্রেন্ড !!!
আপনি ফোন আবিস্কারক এর নাম না জেনেও ব্যাবহার করছেন ফোন, আর নাম নিচ্ছেন আবিস্কারকের গার্লফ্রেন্ড এর নাম।
এটাই হচ্ছে ভালবাসা !
মানুষ হারিযে যায়, কিন্তু তার ভালবাসা টিকে থাকে যুগের পর যুগ।

অন্যতম অবদানসমূহ

টেলিফোন আবিষ্কার

১৮৮৮ সালে ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।

বিজ্ঞানী আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল অবশেষে ২ আগস্ট ১৯২২ নিজের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর টেলিফোন আবিষ্কারের কারণে আজও আমরা তাঁকে স্মরণ করি অত্যন্ত কৃতজ্ঞতাচিত্তে।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel