লাইট ইমিটিং
শুক্রবার, ১৯ জুলাই, ২০১৯
Comment
লাইট ইমিটিং ডায়োড, এলইডি, LED
ভূমিকাঃ
যারা ইলেকট্রনিক্স নিয়ে পড়াশুনা করেন বা শখের বশে কিছু ইলেকট্রনিক প্রজেক্ট তৈরী করেন তাদের কাছে LED একটি পরিচিত নাম। অনেক হবিস্ট রয়েছেন যারা সীমাহীন ঝোঁক আর শখের বশে অর্থ খরচ করে প্রজেক্ট করেন ঠিকই কিন্তু প্রয়োজনীয় এবং প্রিয় এই ডিভাইসটির প্রকৃত পরিচয় অগোচরেই রয়ে গেছে আজো। তাদের জন্য লিখেছি এই পোষ্ট। আমি নিজেও এক সময় জানার আগ্রহে খুজেছি অনেক তথ্য অনলাইনে কিংবা বিভিন্ন বইয়ের পাতায়। কিন্তু ইংরেজী ভাষায় কিছু বিচ্ছিন্ন তথ্য পেলেও বাংলা ভাষায় তথ্য ভিত্তিক কোন পোস্ট পাইনি আজো। একথাটি আবারো প্রমাণ করলো জ্ঞান বিজ্ঞানের চর্চায় আমাদের প্রিয় বাংলা ভাষা অনেক পিছিয়ে। বিষয়টি আমাকে বেশ ব্যথিত করেছে। যাই হোক আমার এই লেখাটি যদি বাংলা ভাষার রচনা সম্ভারকে সমৃদ্ধ করে তাহলে আমি ধন্য আর আশা করছি এই পোষ্টটি হবিস্টদের উপকারে আসবে।
পরিচিতিঃ
এলইডি LED এর পূর্ণ অর্থ হলো Light Emitting Diode বা আলোক নিঃসরণকারী ডায়োড। ইহা একটি বিশেষ ধরণের সেমিকন্ডাকটর নির্মিত ডায়োড যা ফরওয়ার্ড বায়াস অবস্থায় দৃশ্যমান এবং অবলোহিত যা অদৃশ্যমান উভয় প্রকার আলোক তরঙ্গ নিঃসরণ করতে পারে।
ইতিহাস ও ক্রমবিকাশঃ
১৯০৭ সালে মার্কনী ল্যাবের ব্রিটিশ গবেষক হেনরী জোসেফ রাউন্ড (Captain Henry Joseph Round) একটি বিশেষ ধরণের ডিটেকটর (যাক্যাট’স হুইসকার ডিটেকটর নামে পরিচিত) ব্যবহার করে সিলিকন কার্বাইড ক্রিস্টালের ইলেকট্রোলুমিন্যান্স ক্রিয়া আবিস্কার করেন।
১৯২৭ সালে ওলেগ ভ্লাদিমিরোভিচ্ (Oleg Vladimirovich Losev) নামে একজন রাশিয়ান উদ্ভাবক কার্বোর্যান্ডাম পয়েন্ট-কন্টাক্ট জাংশন (Carborundum Point-Contact Junction) হতে আলোক বিকিরণ প্রত্যক্ষ করেন যাকে পৃথিবীর প্রথম এলইডি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তার এই গবেষণা রাশিয়া, জার্মান ও ব্রিটিশ বৈজ্ঞানিক জার্নালসমূহে প্রকাশিত হলেও এর ব্যবহারিক প্রয়োগ তখনো সম্ভব হয়নি।
১৯৫৫ সালে আমেরিকার রেডিও কর্পোরেশনের রুবিন ব্রাউনস্টেইন (Rubin Braunstein) নামে একজন গবেষক প্রত্যক্ষ করেন যে কক্ষ তাপমাত্রায় বিভিন্ন সেমিকন্ডাকটর যৌগ যেমন সিলিকন-জার্মেনিয়াম (SiGe), গ্যালিয়াম আর্সেনাইড (GaAs), গ্যালিয়াম এন্টিমোনাইড (GaSb), ইন্ডিয়াম ফসফাইট (InP) দ্বারা নির্মিত সরল ডায়োডসমূহ অবলোহিত (Infrared) আলোক বিকিরণ সৃষ্টি করে এবং তিনি গ্যালিয়াম আর্সেনাইড (GaAs) এবং অন্যান্য সেমিকন্ডাকটর যৌগ হতে অবলোহিত (Infrared) আলোক বিকিরণ ক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন।
১৯৬১ সালে আমেরিকার বিখ্যাত সেমিকন্ডাকটর ডিভাইস মেনুফ্যাকচারিং কোম্পানী টেক্সাস ইন্সট্রুমেন্টের দুইজন পরীক্ষক রবার্ট বিয়ার্ড এবংগ্রে পিটম্যান (Robert Biard and Gary Pittman) প্রত্যক্ষ করেন যে উপযুক্ত কারেন্ট প্রবাহিত করলে গ্যালিয়াম আর্সেনাইড (GaAs) অবলোহিত (Infrared) আলোক বিকিরণ করে এবং তিনি এই বিকিরণের পেটেন্ট সংগ্রহ করেন।
১৯৬২ সালে আমেরিকার গবেষক নিক হলোনিয়াক (Nick Holonyak) যখন জেনারেল ইলেকট্রিক কোম্পানীর কনসালটিং গবেষক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন তখন তিনি প্রথম ব্যবহারিক লাল বর্ণের দৃশ্যমান আলাক বিকিরণে সক্ষম এলইডি উদ্ভাবন করেন। তার এই অবদানের কারনে তাকে এলইডি’র জনক বলা হয়।
১৯৭২ সালে স্যার হলোনিয়াকের একজন ছাত্র জর্জ ক্রাফোর্ড (M. George Craford) প্রথম হলুদ বর্ণের আলোক বিকিরণ সক্ষম এলইডি উদ্ভাবন করেন এবং লাল ও হলুদ উভয় প্রকার এলইডির আলাক তীব্রতা প্রায় ১০ গুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন।
১৯৭৬ সালে টি. পি. পিয়ার্শাল উচ্চ আলোক তীব্রতা ও দক্ষতা সম্পন্ন এলইডি তৈরী করেন যা অপটিক্যাল ফাইবার কমিউনিকেশন ব্যবস্থার উপযোগী আলোক তরঙ্গদৈর্ঘ বিশিষ্ট বিকিরণ সৃষ্টিতে সক্ষম ছিল।
১৯৬৮ সাল পর্যন্ত এলইডি ছিল খুবই ব্যয় বহুল একটি ডিভাইস এবং একারনে এর ব্যবহার ছিল খুব কম।
১৯৬৮ সালে মনসান্তো কোম্পানী (Monsanto Company) নামে আমেরিকার একটি মাল্টিন্যাশনাল এগ্রিকালচারাল বায়োটেকনোলজি কর্পোরেশন সর্বপ্রথম গ্যালিয়াম আর্সেনাইড ফসফাইট (GaAsP) ব্যবহৃত লাল বর্ণের এলইডি ব্যপকভাবে উৎপন্ন করেন যা ইন্ডিকেটর হিসাবে ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত ছিল। একই বছর হিউলেট প্যাকার্ড (hp) মনসান্তোর সহযোগীতায় এলইডি উৎপাদন শুরু করে। যদিও সে সময়ের এলইডি ক্ষীণ আলোক সম্পন্ন ছিল এবং তা সরাসরি সূর্যালোকে ব্যবহার করা যেত না তথাপি হিউলেট প্যাকার্ড (hp) তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন আলফানিউমেরিক ডিসপ্লে এবং হস্তচালিত ক্যালকুলেটরে তা ব্যবহার করে।
১৯৭০ সালে ফেয়ারচাইল্ড কোম্পানীর গবেষক ডঃ জেন হার্নি (Dr. Jean Hoerni) প্লেনার প্রসেস চীপ ফেব্রিকেশন প্রকৃয়া আবিস্কার করেন এবং উক্ত প্রকৃয়ার মাধ্যমে কম্পাউন্ড সেমিকন্ডাকটর ব্যবহার করে ফেয়ারচাইল্ড কোম্পানী বানিজ্যিকভাবে সফল অর্থাৎ সস্তা দামী এলইডি উৎপাদন করতে সক্ষম হয় এবং এর ফলে এলইডি’র একক মূল্য ৫ সেন্টে নেমে আসে।
১৯৭১ সাল হতে এলইডি উৎপাদনকারী কোম্পানীসমূহ লাল এলইডি’র পাশাপাশি সবুজ এলইডি’র সীমাবদ্ধতা দুর করে দক্ষতা ও কার্যকারীতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় এবং এ সময় হতে ইলেকট্রনিক ইকুইপমেন্টগুলিতে ব্যপকভাবে এলইডি’র ব্যবহার শুরু হয়। ফলে এলইডি’র দাম কমতে থাকে।
১৯৯০ দশক হতে ২০০০ সালের শুরুর দিকে জাপান বিশেষ ধরণের (YAG phosphor white LED) ফসফর সাদা এলইডি তৈরী করে এবং বর্তমানে সাদা এলইডির দ্রুত উন্নয়ন হচ্ছে। এবং গবেষণার মাধ্যমে এর আলো উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলইডির পাওয়ার খরচ খুব কম হওয়ার করনে এটা ধারণা করা যায় যে ভবিষ্যতে কোনদিন ফ্লুরোসেন্ট বাতিকে অপসারণ করে এলইডি নিজের জায়গা করে নিবে।
প্রতীকঃ
এলইডিকে প্রকাশ করার জন্য বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সার্কিটের স্ক্যামিটিক ডায়াগ্রামে পাশের প্রতিকটি ব্যবহার করা হয়। এরকম কোন চিত্র কোন পিসিবিতে দেখলে আমরা বুঝব তদস্থলে একটি এলইডি ব্যবহার করতে হবে।
এলইডি’র বাহ্যিক গঠন চিত্র পাশে দেখানো হয়েছে। বাহ্যিকভাবে একটি এলইডিকে দেখলে যেভাবে এর বিভিন্ন অংশ আমাদের চোখে পড়ে এই অংশে তাই বর্ণনা করবো।
যে কোন এলইডি’র মূল অংশ বা প্রধাণ অংশ হলো একটি সেমিকন্ডাকটর চীপ যা মূলতঃ একটি পি-এন জাংশন ডায়োডকে ধারণ করে। এই চীপটিকে একটি ধাতব নির্মিত ফ্রেমের উপর বসানো হয় যাকে এনভিল বলা হয়। এনভিলের উপরের দিকে যেখানে সেমিকন্ডাকটর চীপটিকে বসানো হয়েছে তার চার পাশে গোলাকৃতি রিফ্লেকটিভ ক্যভিটি সৃষ্টি করা হয় যাতে আলোকের বিচ্ছুরণ প্রতিফলনের মাধ্যমে মোটামুটি একমুখী করা যায়। একটি সুক্ষ ধাতব তার দ্বারা সেমিকন্ডাকটর চীপের পি-টাইপ মেটাল কন্টাক্ট পয়েন্ট এবংপোস্টের মাঝে বৈদ্যূতিক সংযোগ স্থাপন করা হয় যেন এনোডে প্রযুক্ত ভোল্টেজ ডায়োডের পি-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে প্রয়োগ হতে পারে। অপরদিকে এন-টাইপ পার্শ্ব হতে মেটাল কন্টাক্টের মাধ্যমে এনভিলের সাথে অন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয় যাতে ক্যথোডে প্রযুক্ত ভোল্টেজ এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে প্রয়োগ হতে পারে। এবার পুরো ব্যবস্থাটিকে একটি স্বচ্ছ, শক্তপ্লাস্টিক নির্মিত আবরণের মধ্যে ধারণ করা হয়, এরপর এনভিলকে সম্প্রসারণ করে একটি টার্মিনাল বের করা হয় যাকে বলে ক্যথোড এবং পোস্টকে সম্প্রসারণ করে একটি টার্মিনাল বের করা হয় যাকে বলে এনোড। গোলাকার এলইডি’র সন্মুখ প্রান্তে প্লাস্টিক বডির সাথেই এপোক্সি লেন্স সৃষ্টি করা হয় যাতে বিচ্ছুরিত আলোক আরো ঘনীভূত করে দেখা যায়।
আসুন এবার জেনে নিই এলইডি’র মূল মেকানিজম সেমিকন্ডাকটর চীপের গঠন কি রকম। উপরের চিত্রে এলইডি চীপের গঠন দেখানো হয়েছে। এলইডিতে একটি সুক্ষ সেমিকন্ডাকটর চীপ থাকে যা মূলতঃ একটি পি-এন জাংশন ডায়োড। সাবস্ট্রেট স্তরের উপর একটি এন-টাইপ পদার্থের স্তর সৃষ্টি করা হয় এবং উক্ত এন-টাইপ লেয়ারের উপর ডিফিউশন প্রকৃয়ায় একটি পি-টাইপ পদার্থের স্তর সৃষ্টি করা হয়। ফলেপি-টাইপ এবং এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটরের মধ্যে একটি পি-এন জাংশন সৃষ্টি হয়। এবার সাবস্ট্রেটের মধ্য দিয়ে এন-টাইপ হতে একটি মেটাল কন্টাক্ট এবং পি-টাইপ হতে অনুরূপ মেটাল কন্টাক্টের (যা সাধারণতঃ এলুমিনিয়াম নির্মিত) মাধ্যমে কানেকশন বের করে আনা হয়। এন-টাইপ ম্যটেরিয়ালের সাথে সংযুক্ত টার্মিনালকে বলা হয় ক্যথোড এবং পি-টাইপ ম্যটেরিয়ালের সাথে সংযুক্ত টার্মিনালকে বলা হয় এনোড। পি-টাইপ স্তরটি আকারে ছোট হলে এন টাইপ লেয়ারের বর্ধিতাংশের উপর একটি SO2 এর স্তর সৃষ্টি করা হয় যাতে তা এন-টাইপ ম্যটেরিয়াল ও মেটাল কন্টাক্টের মধ্যে ইনসুলেটর হিসাবে কাজ করতে পারে। মেটাল কন্টাক্টকে পি-টাইপ ম্যাটেরিয়ালের মাঝামাঝিতে না লাগিয়ে ধার ঘেঁষে বা পার্শ্বে লাগিয়ে মাঝখানে উন্মুক্ত রাখা হয় যাতে আলোক বিকিরণ বাধাহীনভাবে খুব সহজে বাহিরে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কার্যপ্রণালীঃ
এলইডি’র কার্যপ্রণালী বুঝার আগে নীলস বোরের পারমানবিক মডেলের একটি স্বীকার্য ভালভাবে বুঝে নিই। বোরের পারমানবিক মডেলের একটি স্বীকার্যহলো – “কোন ইলেকট্রন বহিস্থ উৎস হতে শক্তি অর্জন করলে ইলেকট্রনটি পরবর্তি বহিস্থ কক্ষপথে চলে যায় এবং এই অবস্থা একটি ক্ষণস্থায়ী অবস্থা ইলেকট্রনটি খুব শীঘ্রই পূর্বের কক্ষে ফিরে আসবে এবং আসার সময় তার অর্জিত শক্তি বিকিরণ করবে”।
এই বিকিরিত এনার্জির রূপ পদার্থের অবস্থা ভেদে বিভিন্ন রকম হয়। যেমন Siএবং Ge জাংশনের ক্ষেত্রে অধিকাংশ এনার্জি তাপ আকারে বিকিরিত হয় এবং খুব কম পরিমান এনার্জি ফোটন আকারে বিকিরিত হয়। এই বিকিরিত তাপের পরিমানও খুব কম থাকে একারণে আমার বুঝতে পারিনা।
পি-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে মেজরিটি কেরিয়ার হিসাবে থাকে হোল এবং এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটরে মেজরিটি কেরিয়ার হিসাবে থাকে ইলেকট্রন। যখন এলইডিকে ফরওয়ার্ড বায়াস প্রদান করা হয় তখন এন-টাইপ সেমিকন্ডাকটরের ফ্রি ইলেকট্রনসমূহ ব্যটারী হতে বৈদূতিক শক্তি লাভ করে ব্যলেন্স ব্যান্ড হতে কন্ডাকশন ব্যন্ডে স্থানান্তরিত হয় এবং বৈদ্যূতিক চাপের প্রভাবে জাংশনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পি-টাইপ অঞ্চলে পৌছে। পি-টাইপ অঞ্চলে মেজরিটি ক্যরিয়ার হিসাবে হোলসমূহ ভ্যালেন্স ব্যান্ডে অবস্থান করে। আগত ইলেকট্রনসমূহ কন্ডাকশন ব্যান্ড হতে ভ্যালেন্স ব্যান্ডে পতিত হয়ে হোল সমূহের সাথে মিলিত হয় এবং“ইলেকট্রন হোল রিকম্বিনেশন” ক্রিয়া সম্পন্ন করে, একই সাথে মিলিত হওয়ার সময় ইলেকট্রনসমূহ তাদের অর্জিত শক্তিকে ফোটন আকারে বিকিরণ করে। এভাবে পি-এন জাংশনটি একটি আলোক উৎসে পরিনত হয়।
বিকিরিত আলোক বর্ণের ভিন্নতার কারনঃ
এই বিষয়টি বুঝার আগে আমাদের ব্যান্ডগ্যাপ এনার্জি সম্পর্কে জানতে হবে। ব্যান্ডগ্যাপ বলতে বুঝানো হয় পরপর দুটি শক্তিস্তরের মধ্যবর্তী দূরত্ব যেখানে কোন ইলেকট্রন অবস্থান করতে পারেনা। সাধারণতঃ সেমিকন্ডাকটরের ক্ষেত্রে ব্যান্ডগ্যাপ বলতে ভ্যালেন্স ব্যান্ডের সবোর্চ্চ সীমা এবং কন্ডাকশন ব্যান্ডের সর্বনিম্ন সীমার মধ্যবর্তী শক্তি পার্থক্যকে বুঝানো হয়। এই শক্তি পার্থক্য বা এনার্জিগ্যাপ বা ব্যান্ডগ্যাপ বিভিন্ন পদার্থের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম হয় এবং ইহাকে ইলেকট্রন ভোল্ট (eV) এককের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এখানে বিভিন্ন সেমিকন্ডাকর যৌগের ব্যান্ডগ্যাপ তালিকা দেয়া হলো যা আমাদের কাজে লাগবে।
প্রকারভেদঃ
আকৃতি অনুসারে এলইডি বিভিন্ন রকম হতে পারে যেমনঃ গোলাকৃতি, চ্যাপ্টা ইত্যাদি। আবার বর্ণের দিক দিয়ে বিভিন্ন রকম হতে পারে যেমন লাল, হলুদ সবুজ, নীল, সাদা ইত্যাদি। এছাড়া দৃশ্যমান এবং ইনফ্রারেড (অদৃশ্য) আলোক উভয় ধরনের এলইডি রয়েছে।

ব্যবহারঃ
বিভিন্ন অডিও সিস্টেমে
ইলেকট্রনিক মিটারে
বিভিন্ন ডিজিটাল মিটারে
অডিও এনালাইজারে
মনিটরের ব্যকলাইট হিসাবে
ইন্ডিকেটর হিসাবে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সিস্টেমে।
সেভেন সেগমেন্ট ডিসপ্লেতে প্রতিটি সেগমেন্টে এলইডি ব্যবহার হয়।
রিমোট কন্ট্রোল ট্রান্সমিটারে এবং সিসিটিভি ক্যমেরাতে ইনফ্রারেড এলইডি ব্যবহার হয়।
বিভিন্ন ইলেকট্রনিক বিজ্ঞাপনের আলফা নিউমেরিক ডিসপ্লে তৈরীতে।
সুবিধাঃ
পাওয়ার খরচ কম
আকারে ছোট ও হালকা
তাপোৎপাদী নয়
দামে সস্তা
দীর্ঘজীবি আলোক উৎস
অসুবিধাঃ
ইহার ফরওয়ার্ড রেজিস্ট্যান্স বেশী থাকার কারণে ইহাকে রেকটিফায়ার হিসাবে ব্যবহার করা যায়না।
পোলারিটি/এনোড ও ক্যথোড নির্ণয়ের কৌশলঃ
এলইডি’র গোলকৃতি দেহের এক পার্শ্বে ফ্লাট স্পট দেয়া থাকে, এই ফ্লাট স্পটের নিকটবর্তী টার্মিনালকে ক্যাথোড বা নেগেটিভ টার্মিনাল বলে এবং অপরটি পজেটিভ টার্মিনাল বা এ্যানোড বলে। এছাড়াও যেগুলি চ্যাপ্টা এলইডি সেগুলিতে ফ্লাট স্পট না থাকলেও এলইডি’র একটি টার্মিনাল খাটো থাকে যা দেখে নেগেটিভ টার্মনাল সনাক্ত করা যায়।
এল ই ডি বা লাইট ইমিটিং ডায়োড
এল ই ডি বা লাইট ইমিটিং ডায়োড। এর দুইটি পা থাকে। একটি এনোড বা পজেটিভ আরেকটি ক্যাথোড বা নেগেটিভ। নতুন অবস্থায় সাধারণত এর পজেটিভ বা এনোড পা টি অপরটি হতে বড় হয় লম্বায়। কোন কারণে পা দুটো সমান হয়ে গ্যালে বুঝবার জন্য দুটো অপশন সামনে থাকে –
এলইডির ভিতরে তাকালে দুটো অংশ দেখা যায় এবং এর নীচের দিকে থাকা অংশের সাথে যুক্ত পা টি এনোড আর অপরটি ক্যাথোড বা নেগেটিভ। আরেকটি পদ্ধতি হলো এর গায়ের মার্কিং যা অবশ্য সব এলইডিতে নাও থাকতে পারে। একদিকে সমান করা অংশ এর দিকের পা টি ক্যাথোড বা নেগেটিভ হবে ও অপর টি এনোড বা পজেটিভ হবে।
সার্কিটে লাগানোর সময় এর পজেটিভ প্রান্ত সবসময় সার্কিটের + প্রান্তের সাথে সংযোগ পাবে এবং নেগেটিভ প্রান্ত নেগেটিভ বা গ্রাউন্ডের সাথে সংযোগ দিতে হবে। উল্টো করে কানেকশন দিলে এর থেকে আমরা আলো বা কাজ পাব না। বাজারে নানান রকম সাইজ ও ডিজাইনের এলইডি পাওয়া যায়। খুব কম আলো দিতে সক্ষম এলইডি থেকে শুরু করে একেবারে চোখ ধাধানো আলো দিতে সক্ষম শক্তিশালী এলইডি এখন সহজলভ্য ইলেক্ট্রনিক্স এর দোকানগুলোতে।
আধুনিক লাইট ফিটিংস মানেই এলইডি লাইটিং। এর দ্বারা অল্প বিদ্যুত খরচে অন্যান্য প্রকার আলো প্রদানকারী লাইটের তুলনায় বেশী আলো পাওয়া যায় এবং এর আয়ু কমবেশী সঠিক ভাবে ব্যবহার করলে ৫০ হাজার ঘন্টা।
☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "লাইট ইমিটিং"
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন