আজকে প্রকাশিত চাকরির পরীক্ষার নোটিশ গুলো পাবেন

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধটি ঢাকার মোহাম্মদপুরের রায়ের বাজারে অবস্থিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পরাজয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে পাকিস্তানি শাসকচক্র বাংলাদেশকে চিরতরে মেধাশূন্য করার এক ঘৃণ্য পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অগ্রসর হয়। তারা ভেবেছিল এদেশকে মেধাশূন্য করা গেলে বাঙ্গালি জাতির মেরুদন্ড ভেঙ্গে যাবে। এজন্য মুক্তিযুদ্ধ শুরু থেকেই তারা হত্যা করেছিল বাঙ্গালি জাতির বিবেক, চেতনা, মননশীলতা, ঐতিহ্য ও সংষ্কৃতির ধারক ও বাহক এ মাটির সন্তান বুদ্ধিজীবীদের। তবে ১০ থেকে ১৪ই ডিসেম্বরের মধ্যে এই বর্বরতা ও হত্যাযজ্ঞ ভয়াবহ রূপধারন করে। পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর নির্দেশনা ও মদদে এদেশীয় একশ্রেনীর দালাল এদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সাংবাদিক, নাট্যকার, শিল্পী প্রভৃতি শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং এই হত্যাযজ্ঞ ঘটায়। তারা ড. গোবিন্দচন্দ্র দেব, মুনীর চৌধুরী, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, শহিদুল্লাহ কায়সার, ডাঃ ফজলে রাব্বীসহ এদেশের প্রথম সারির অনেক বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। বিজয় লাভের কিছুদিন পর তাদের ক্ষত-বিক্ষত লাশ রায়ের বাজারের উক্ত স্মৃতিসৌধের স্থানটিতে পাওয়া যায়। তাদের স্মৃতিকে স্মরনীয় করে রাখতে এই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মান করা হয় যা রায়ের বাজার বধ্যভূমি “স্মৃতিসৌধ” নামে পরিচিত। সমগ্র স্থানটি ৩.৫১ একর আয়তনবিশিষ্ট। এটি ১৫.২৪ মিটার বর্গাকার একটি গ্রিড দ্বারা বিভক্ত হয়েছে। মূল বেদিটি রাস্তা থেকে ২.৪৪ মিটার উঁচু। স্মৃতিসৌধের প্রধান অংশটি ১৭.৬৮ মি উঁচু, ০.৯১ মি পুরু ও ১১৫.৮২ মি দীর্ঘ একটি ইটের তৈরি বাঁকানো দেয়াল। এটি রায়ের বাজারের আদি ইটখোলার প্রতীক, যেখানে বুদ্ধিজীবীদের মৃতদেহগুলি পড়েছিল। দেয়ালটির দুদিক ভাঙা। এ ভগ্ন দেয়াল ঘটনার দুঃখ ও শোকের গভীরতা নির্দেশ করছে। দেয়ালের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে একটি ৬.১০ মিটার বর্গায়তনের জানালা আছে। এ জানালা দিয়ে পেছনের আকাশ দেখা যায়। জানালাটি দেয়ালের বিশালতাকে কমিয়ে আনে। বাঁকা দেয়ালের সম্মুখভাগে একটি স্থির জলাধার আছে। জলাধারের ভেতর থেকে কালো গ্র্যানাইট পাথরের একটি স্তম্ভ উঠে এসেছে। এটি শোকের প্রতীক। স্মৃতিসৌধের প্রধান প্রবেশপথ চত্বরের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে। এপথে প্রবেশ করলে দর্শনার্থী একটি বটগাছের মুখোমুখি হন। এই বটগাছ নিকটবর্তী শরীর-শিক্ষা কলেজ প্রাঙ্গণস্থ আদি বটগাছের প্রতীকরূপ। আদি বটগাছের নিচে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে প্রথমে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে পরে ইটখোলায় নিয়ে হত্যা করা হতো। চিরসবুজ বটগাছটি ছাড়া অন্য যেসব গাছ সৌধের চত্বরে লাগানো হয়েছে, সেগুলির পাতা নির্দিষ্ট সময়ে ঝরে যায়। এ গাছগুলি ডিসেম্বরে মাসে পত্রহীন অবস্থায় থাকে। এ দৃশ্য বার্ষিক অনুষ্ঠানের সময় শোকানুভূতিকে আরও আবেগময় করে তোলে।

পরিদর্শনের সময়সূচীঃ

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধটি সকাল ৯ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। রাতের বেলায় এখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে।

টিকেট মূল্যঃ


এখানে টিকিটের কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। বিনামূল্যে যে কোন পর্যটক ঘুরে দেখতে পারেন।

কিভাবে যাওয়া যায়ঃ

রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ দেখতে যেতে হলে পুরান ঢাকার বাসিন্দাদের বাবুবাজার আসতে হবে। বাবু বাজার ব্রীজের নীচে নদী সংলগ্ন থেকে যানজাবিল ব্রাদার্স নামে কিছু লোকাল বাস এখান থেকে ছেড়ে যায়। এতে ১২ টাকার একটি টিকেট কেটে বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে আসা যাবে। এছাড়া গাবতলী থেকে আসতে হলে ঠিক তেমনি যানজাবিল ব্রাদার্স প্রভৃতি পরিবহনে ১৩/১৪ টাকার টিকেটে কেটে আসা যাবে। এই রুটে ব্রাদার্স পরিবহনের যথেষ্ট গাড়ি চলাচল করে। অথবা আপনি মোহাম্মদপুরের বাসে উঠে ধানমন্ডি ১৫ (পুরান) নেমে রিক্সাযোগে যেতে পারবেন।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "রায়ের বাজার বধ্যভূমি স্মৃতিসৌধ"

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel