আজকে প্রকাশিত চাকরির পরীক্ষার নোটিশ গুলো পাবেন

দিনাজপুর জেলা

দিনাজপুর জেলা


দিনাজপুর জেলা

দিনাজপুর জেলা


দিনাজপুর জেলা(মোট আয়তন)☞☞ ৩৪৪৪.৩০ কিমি২ (১৩২৯.৮৫ বর্গমাইল)। 
দিনাজপুর জেলা(নামকরণ)☞☞জনশ্রুতি আছে জনৈক দিনাজ অথবা দিনারাজ দিনাজপুর রাজপরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর নামানুসারেই রাজবাড়ীতে অবস্থিত মৌজার নাম হয় দিনাজপুর। পরবর্তীতে ব্রিটিশ শাসকরা ঘোড়াঘাট সরকার বাতিল করে নতুন জেলা গঠন করে এবং রাজার সম্মানে জেলার নামকরণ করে দিনাজপুর।

দিনাজপুর জেলা(ব্রিটিশ শাসন)☞☞১৭৬৫ সালে দেওয়ানি গ্রহণের ফলে দিনাজপুর জেলা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণভুক্ত হয়। ১৭৭২ সালে দিনাজপুরে একজন ইংরেজ কালেক্টর নিয়োগ দেওয়া হয়। সেই সময় এই অঞ্চলের অরাজকতার কুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। ১৭৮৬ সালে এখানে ইংরেজ শাসকদের “The British Administrative Control” গঠিত হয়। সেই সময় লক্ষ্ণৌতি, বাজিন্নাতাবাদ, তেজপুর, পানজারা, ঘোড়াঘাট, বারবকাবাদ ও বাজুহা, এই ছয়টি সরকারের অংশ নিয়ে দিনাজপুর জেলা (তখনকার ঘোড়াঘাট জেলা) গঠিত হয়। দিনাজপুর সদরে জেলা সদর গঠিত হয়।[২] ১৭৮৬ সালে ম্যারিয়ট নামে একজনকে কালেকটরের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর পর রেড ফার্ণ ও ভ্যানসিটার্ট অল্প সময়ের জন্য দিনাজপুরের কালেকটর নিযুক্ত হন। পরবর্তী কালেকটর হ্যাচ জেলার বিচারের কাজেও নিযুক্ত হন। সেই সময় জেলা প্রশাসনের সীমানা মালদা ও বগুড়ার দিকে অগ্রসর হয়। আঠারো শতকের শেষ দিকে দিনাজপুরে নীল চাষ শুরু হয়।
দিনাজপুর ছিল অবিভক্ত বাংলার সর্ববৃহৎ জেলা। বগুড়া, মালদা, রাজশাহী, রংপুর ও পূর্ণিয়া জেলার বেশকিছু অংশ তখন দিনাজপুরের অন্তর্ভুক্ত ছিল। ১৮৫৭-৬১ সালের জরিপ অনুসারে দিনাজপুর জেলার আয়তন ছিল ৪,৫৮৬ বর্গমাইল (১১,৮৮০ কিমি২)। প্রশাসনিক ও আইন প্রয়োগের সুবিধার্থে ১৭৯৫ থেকে ১৮০০ সালের মধ্যে জেলার একটি বিশাল অংশ রাজশাহী, রংপুর ও পূর্ণিয়ার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৮৩৩ সালে আবার বেশ কিছু এলাকা বগুড়া ও মালদায় চলে যায়। পরবর্তীতে ১৮৬৪-৬৫, ১৮৬৮ ও ১৮৭০ সালে আরো এলাকা মালদা ও বগুড়া জেলার অধীনে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষে ১৮৯৭-৯৮ সালে সম্পূর্ণ মহাদেবপুর থানাকে রাজশাহীর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সেই সময় শুধু ঠাকুরগাঁও উপবিভাগ ব্যতীত সম্পূর্ণ দিনাজপুর জেলা কালেকটরের অধীনে শাসিত হতো।
১৮৫৬ সালে দিনাজপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলার প্রথম দিককার ৪০টি পৌরসভার মধ্যে এটি অন্যতম। শুরুতে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টাউন কমিটি পৌরসভা শাসন করত। পরবর্তীতে ১৮৬৮ সালে 'জেলা শহর আইন'-এ ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের বদলে একজন চেয়ারম্যান নিযুক্ত করার বিধান রাখা হয় এবং চেয়ারম্যানকে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের সমমর্যাদায় আসীন করা হয়। ১৮৬৯ সালে প্যাটারসন নামক একজনকে দিনাজপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়।

দিনাজপুর জেলা(প্রতিষ্ঠা  সাল)☞☞১৭৮৬ সালে দিনাজপুর জেলা গঠিত হয় ।১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়ে দিনাজপুরের একটি বড় অংশ পশ্চিমবঙ্গে চলে যায় এবং তার নাম হয় পশ্চিম দিনাজপুর জেলা। ১৯৮৪ সালে দিনাজপুরের দুটি মহকুমা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় পৃথক জেলায় পরিণত হয়।

দিনাজপুর জেলা(ভৌগোলিক সীমানা)☞☞উত্তর-দক্ষিণে লম্বালম্বিভাবে বিস্তৃত দিনাজপুর জেলার উত্তরে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলা, দক্ষিণে গাইবান্ধা ও জয়পুরহাট জেলা, পূর্বে নীলফামারী ও রংপুর জেলা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।
                                   দিনাজপুর জেলা
দিনাজপুর জেলা(মৌজা )☞☞সর্বমোট ১,৯২৬টি  মৌজা।  

দিনাজপুর জেলা(পৌরসভা)☞☞সর্বমোট ০৮টি পৌরসভাদিনাজপুর, বিরামপুর, সেতারগঞ্জ, বীরগঞ্জ, পার্বতীপুর, ঘোড়াঘাট, ফুলবাড়ী, হাকিমপুর ও বিরল।

দিনাজপুর জেলা(ইউনিয়ন)☞☞ সর্বমোট ১০২টি ইউনিয়ন।

দিনাজপুর জেলা(গ্রাম)☞☞ সর্বমোট ২,১৩১টি গ্রাম।

দিনাজপুর জেলা(উপজেলা)☞☞ সর্বমোট ১৩টি উপজেলা।বোচাগঞ্জ, বিরল, কাহারোল, বীরগঞ্জ,
দিনাজপুর সদর, খানসামা, চিরিরন্দর ও ফুলবাড়ী।

দিনাজপুর জেলা(বিখ্যাত খাবার)☞☞ লিচু,কাটারিভোগ চাল ,চিড়া,পাপড়। 

দিনাজপুর জেলা(রেল যোগাযোগ)☞☞ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে দিনাজপুর এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনে সরাসরি এখানে আসা যায়। কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে প্রতিদিন একাধিক ট্রেন দিনাজপুর এর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
                          ঢাকা থেকে দিনাজপুর রেলে যেতে প্রায় ১০ ঘন্টা লাগে।
একতা এক্সপ্রেস, ঢাকা থেকে ছাড়ে সকাল ১০ টায় এবং দিনাজপুর থেকে রাত ৯ টা ২০ মিনিটে।
দ্রুতযান, ঢাকা থেকে ছাড়ে সন্ধ্যা ৭ টা ৪০ মিনিট এবং দিনাজপুর থেকে সকাল ৭ টা ৪০ মিনিটে।

দিনাজপুর জেলা(আকাশ পথ)☞☞দিনাজপুরে সরাসরি আকাশ পথে আসা যায় না, তবে ঢাকা থেকে সরাসরি বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে সৈয়দপুর বিমানবন্দরের সাথে; ঢাকা থেকে সৈয়দপুর এসে সেখান থেকে সড়কপথে দিনাজপুরে আসা যায়। বাংলাদেশ বিমান, জেট এয়ার, নোভো এয়ার, রিজেন্ট এয়ার, ইউনাইটেড এয়ার - প্রভৃতি বিমান সংস্থার বিমান পরিষেবা রয়েছে ঢাকা থেকে সৈয়দপুর আসার জন্য।

দিনাজপুর জেলা(সড়কপথ)☞☞ঢাকার গাবতলী-কল্যাণপুর ও মহাখালী থেকে দিনাজপুরগামী বাসগুলি ছেড়ে যায়। বাস সার্ভিসের মধ্যে রয়েছে নাবিল পরিবহন, এস আর ট্রাভেলস, এস এ পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী পরিবহন ইত্যাদি।

দিনাজপুর জেলা(নদনদী)☞☞দিনাজপুর জেলায় প্রায় ১২টি নদী রয়েছে। নদীগুলো হচ্ছে আত্রাই নদী, কাঁকড়া নদী, করতোয়া নদী, আপার করতোয়া নদী, ইছামতি নদী (দিনাজপুর), খড়খড়িয়া নদী, চিরনাই নদী, ছোট যমুনা নদী, টাঙ্গন নদী, ঢেপা নদী, নলশিশা নদী, পুনর্ভবা নদী এবং যমুনেশ্বরী নদী।

দিনাজপুর জেলা(লোকসংস্কৃতি)☞☞ভাওয়াইয়া, কীর্তন, পাঁচালি, মেয়েলি গীত, গোরক্ষনাথের গান, চড়কের গান, বাউল গান, প্রবাদ-প্রবচন, ছড়া, ছিলকা, হেয়ালি, ধাঁধা, জারিগান উল্লেখযোগ্য।

দিনাজপুর জেলা(বিশিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব)☞☞
অধ্যাপক ইউসুফ আলী, স্বাধীনতার সনদ পাঠক, মুজিবনগর সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী, বাংলাদেশের প্রথম শিক্ষামন্ত্রী;
আব্দুল্লাহ আল কাফি, বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সমাজকর্মী, দিনাজপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য;
আবুল হাসান মাহমুদ আলী, সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী;
এম আব্দুর রহিম, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সংবিধান রচনাকারী দলের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য;
কমরেড মোহাম্মদ ফরহাদ, স্বাধীন বাংলাদেশের একজন স্থপতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য;
খালেদা জিয়া, বাংলাদেশের সাবেক ও প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী;
খুরশীদ জাহান হক, সাবেক সংসদ সদস্য;
ডক্টর গোবিন্দ চন্দ্র দেব, ১৯৭১-এ শহীদ বুদ্ধিজীবী;
ধীমান ঘোষ, বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
নিতুন কুন্ডু, বাংলাদেশি চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, মুক্তিযোদ্ধা ও ব্যবসায়ী;
মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশের সাবেক সেনাপ্রধান ও বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটির সদস্য;
প্রেমহরি বর্মন, দিনাজপুর জেলা তফশিলী সম্প্রদায়ের নেতা, ব্রিটিশ ভারতের এমপি ও বঙ্গীয় প্রাদেশিক পরিষদের মন্ত্রী;
শহীদ ক্যাপ্টেন মাহবুবুর রহমান, (বীর উত্তম), ১৯৭১-এ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা;
লিটন দাস, বাংলাদেশি ক্রিকেটার;
সুভাষ দত্ত, বাংলাদেশি চলচ্চিত্রশিল্পী, নির্মাতা ও অভিনেতা;
হাজী মোহাম্মদ দানেশ, অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতের কৃষক নেতা।

দিনাজপুর জেলা(চিত্তাকর্ষক স্থান)☞☞
আওকরা মসজিদ,
আনন্দ সাগর,
কান্তজীর মন্দির,
কালিয়া জীউ মন্দির,
কোরাই বিল,
গৌরগোবিন্দ,
ঘুঘুডাঙ্গা জমিদার বাড়ি,
চেহেলগাজী মাজার,
জিয়া হার্ট ফাউন্ডেশন,
দিনাজপুর ঈদগাহ ময়দান,
দিনাজপুর জাদুঘর,
দিনাজপুর জিলা স্কুল,
দিনাজপুর রাজবাড়ি,
নয়াবাদ মসজিদ,
নওপাড়া আদর্শ গ্রাম,
পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন,
বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি,
বারদুয়ারি,
মাতাসাগর,
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর,
রামসাগর,
রামসাগর জাতীয় উদ্যান,
রুদ্রপুর দীপশিখা বিদ্যালয়,
সিংহ দরওয়াজা,
সিংড়া জঙ্গল,
সীতা কুঠুরী,
সীতাকোট বিহার,
সীমান্ত শিখা ক্লাব, হাকিমপুর,
সুখসাগর,
স্বপ্নপুরী,
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়,
হাবড়া জমিদার বাড়ি,
হিলি স্থলবন্দর।

দিনাজপুর জেলা☞☞☞☞উল্লেখযোগ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
দিনাজপুর জেলা(বিশ্ববিদ্যালয়)☞☞
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়;

দিনাজপুর জেলা(কলেজ)☞☞
বিরামপুর সরকারি কলেজ
পার্বতীপুর ডিগ্রী কলেজ (১৯৬৪),
বিরল ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২),
দাউদপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৭২),
হাকিমপুর ডিগ্রি কলেজ (১৯৮৪),
দিনাজপুর সরকারি কলেজ (১৯৪২),
দিনাজপুর সরকারি সিটি কলেজ (১৯৬৬);

দিনাজপুর জেলা(মাধ্যমিক বিদ্যালয়)☞☞
উইলিয়াম কেরী নিম্ন মাধ্যমিক স্কুল (১৭৯৯),
দিনাজপুর জিলা স্কুল (১৮৫৪),
দিনাজপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৮৬৯),
জুবিলি হাইস্কুল (১৮৮৭),
মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩),
রাজারামপুর এসইউ উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩),
মোল্লাপাড়া দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৩),
পার্বতীপুর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৪),
রুদ্রানী উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৫),
সুজাপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯১৯),
ফুলবাড়ী জিএম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২০),
পলাশবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২১),
জ্ঞানাঙ্কুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৫),
সারদেশ্বরী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯২৭),
দিনাজপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০),
একইর মঙ্গলপুর উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৩০),
কাহারোল উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪০),
হাবড়া উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪২),
রানীগঞ্জ দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৪৫),
নুরুলহুদা উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫১),
নিউ পাকেরহাট উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৫৯),
বীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় (১৯৬২),
আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও ভোকেশনাল ইন্সটিটিউট, বিরামপুর (১৯৯৪);
প্রাথমিক বিদ্যালয়:মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় (১৮৪২),
শিয়ালা প্রাথমিক বিদ্যালয়;

দিনাজপুর জেলা(মাদ্রাসা)☞☞
জুড়াই ফাজিল মাদ্রাসা (১৯৫২),
ভবানীপুর ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা (১৯৭২)
বিরামপুর ফাজিল মাদ্রাসা।

দিনাজপুর জেলা(অর্থনীতি)☞☞দিনাজপুর একটি কৃষিনির্ভর জেলা। জেলার অর্থনীতির চালিকাশক্তি হলো কৃষি। জনগোষ্ঠীর মোট আয়ের ৬৩.৯০% আসে কৃষিখাত থেকে। দিনাজপুর কাটারিভোগ ও কালিজিরা ধান, চিঁড়া, আম ও লিচুর জন্য বিখ্যাত। দিনাজপুরের প্রধান শস্য হলো ধান। সমগ্র বাংলাদেশের চালের চাহিদার একটি বড় অংশ আসে দিনাজপুর থেকে। এছাড়াও দিনাজপুরে প্রচুর গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন ও টমেটো-ও উৎপাদিত হয়। ফলের মধ্যে লিচু, আম, কলা, কাঁঠাল ও জাম উৎপাদিত হয়। দিনাজপুরের আম ও লিচু উৎকৃষ্ট মানের। এছাড়া দিনাজপুর জেলার মাশিমপুরের বেদেনা লিচু বিশ্ববিখ্যাত। বর্তমানে এ লিচু বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।
অর্থনীতির প্রধান উৎস কৃষি হওয়ায় দিনাজপুর জেলায় গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলোর অধিকাংশই কৃষিভিত্তিক। দিনাজপুর জেলার শিল্পকারখানার মধ্যে সেতাবগঞ্জ চিনি কল লিমিটেড, দিনাজপুর টেক্সটাইল মিলস লিমিটেড অন্যতম। ধান দিনাজপুরের প্রধান শস্য হওয়ায় এখানে প্রায় ১০০টির মতো স্বয়ংক্রিয়, আধা-স্বয়ংক্রিয় চালকল ও অসংখ্য চাতাল-নির্ভর (হাস্কিং) চালকল রয়েছে। এছাড়া বিরলে একটি পাটকল রয়েছে।
প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে দিনাজপুরে রয়েছে পিট-কয়লার খনি। বাংলাদেশে আবিষ্কৃত পাঁচটি কয়লাখনির মধ্যে তিনটির অবস্থান দিনাজপুরে- বড়পুকুরিয়া, ফুলবাড়ী ও দিঘীপাড়া। বর্তমানে শুধু বড়পুকুরিয়ায় মাটির নিচ থেকে কয়লা উত্তোলন করা হয়। এখান থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১৫০০ টন কয়লা উত্তোলন করা হয়। ২০০৬ সালে ফুলবাড়ীতে কয়লাখনি স্থাপনের কাজ স্থানীয়দের বাঁধার মুখে বন্ধ হয়ে যায়।[৬] বড়পুকুরিয়ায় উৎপাদিত কয়লা ব্যবহার করে বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়। দিনাজপুর জেলার মোট আয়ের ৬.২৯% ও ৩.৯০% আসে যথাক্রমে অকৃষি শ্রমিক ও শিল্পখাত থেকে।

দিনাজপুর জেলা(মুক্তিযুদ্ধে অবদান)☞☞৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে দিনাজপুর ৭ নং সেক্টরের অধীনে ছিল। ২৯ মার্চ ফুলবাড়ী উপজেলার দিনাজপুর রোডে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি, গোলাবারুদ, অস্ত্রশস্ত্রসহ বহু রসদপত্র দখল করে। ৮ এপ্রিল পার্বতীপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, বাগবাড়ী ও পেয়াদাপাড়ায় পাকবাহিনী প্রায় ৩০০ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। ১৯ এপ্রিল পাকবাহিনী হাকিমপুর উপজেলার হিলি আক্রমণ করে। হাকিমপুর ছাতনীতে পাকবাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ২ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। বিরামপুর উপজেলার কেটরা হাটে মুক্তিযোদ্ধা ও পাকবাহিনীর লড়াইয়ে ৭ জন পাকসেনা নিহত এবং ১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২০ জুলাই পাকসেনারা নবাবগঞ্জ উপজেলার খয়েরগনি গ্রামে ২১ জন নিরীহ লোককে নির্মমভাবে হত্যা করে। তারা ১০ অক্টোবর নবাবগঞ্জ উপজেলার চড়ারহাটে ১৫৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ১৩ নভেম্বর পাকবাহিনী বিরল উপজেলারবিজোড় ইউনিয়নের বহলায় ৩৭ জন নিরীহ লোককে হত্যা করে। ২১ নভেম্বর-১১ ডিসেম্বর হাকিমপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ৩৪৫ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ডিসেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে বীরগঞ্জ উপজেলার ভাতগাঁও ব্রিজের পূর্বপাড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণে প্রায় ৫০ জন পাকসেনা নিহত হয় এবং পাকবাহিনীর দুটি ট্যাংক ধ্বংস হয়। লড়াইয়ে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ৪ ডিসেম্বর সাধারন জনগণ বিরামপুর উপজেলারবেপারীটোলায় একটি জীপ আক্রমণ করে কয়েকজন পাকসেনাকে হত্যা করে। ১৫ ডিসেম্বর বগুলাখারীতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ৩০ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। এছাড়াও বিরল উপজেলার বহবল দীঘিতে পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে প্রায় ১০০ জন পাকসেনা নিহত হয়। কাহারোল উপজেলায় পাকবাহিনীর সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের লড়াইয়ে ১০ জন পাকসেনা ও ৭ জন নিরীহ বাঙালি নিহত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের পর দিনাজপুরে ৪টি বধ্যভূমি ও ৭টি গণকবর আবিষ্কৃত হয়। শহীদদের স্মরণে দিনাজপুর জেলায় মোট ৫টি স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।

☞ এই পোষ্ট সম্পর্কে যদি আপনার কোন প্রশ্ন☞জিজ্ঞাসা☞সমস্যা☞তথ্য জানার থাকে তাহলে আপনি☞কমেন্ট করলে আপনাকে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করব☞☞☞ "দিনাজপুর জেলা "

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Iklan Atas Artikel

Iklan Tengah Artikel 1

Iklan Tengah Artikel 2

Iklan Bawah Artikel